নিজস্ব প্রতিবেদক :::: স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনিকে তাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে ২২তম দিনের কর্মসূচি পালন শেষে বরিশাল শহরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে কর্ণকাঠি এলাকায় যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
ওই সময় মহিউদ্দিন রনি তার ফেরিভাইড ফেসবুক পেইজ থেকে একটি লাইভ করেন। লাইভে দেখা যায়, তিনি যে মোটরসাইকেলে চড়ে যাচ্ছেন, তার পেছনে আরও কয়েকটি মোটরসাইকেল। দীর্ঘসময় ধরে মোটরসাইকেলগুলোয় থাকা কয়েকজন যুবক তাকে তাড়া করছে।
পরে এ বিষয়ে মহিউদ্দিন রনি সাংবাদিকদের বলেন, কারা কি কারণে তাড়া করছে আমি জানি না। তাড়া করে আসলে লাভ নেই। যারা তাড়া করছেন সেটা তাদের বৃথা চেষ্টা। যদি আইন প্রশাসনের লোক হন তাহলে বলবেন আমি নিজে গিয়ে বলবো ‘অ্যারেস্ট মি’। আমি ভেবেছি আওয়ামী লীগের লোক হয়তো। যদি আইন প্রশাসনের লোক না হয় কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হয় তাহলে আমি বিচার চাচ্ছি রাষ্ট্রের কাছে প্রশাসনের কাছে। কিন্তু এভাবে তাড়া করবেন কেন? আমি চোর নাকি?
তিনি বলেন, আন্দোলনের এ পরিস্থিতিতে আমি আগেও যা চেয়েছি, এখনও তা চাচ্ছি। আমাদের দাবিগুলো উপদেষ্টা শুনুক এবং জানুক। সেইসঙ্গে তারা যে দাবি মেনে নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্যাডে তারা লিখিত দিক, যেখানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সই থাক। যেখানে তারা কতদিনে কোন কোন সময়ে কোন কোন কাজটা করবে অর্থাৎ তাদের যে রূপরেখা সেটাও আমাদের জানা দরকার। এইটা করবো ওইটা করবো সেটা আসলে নির্বাচনী ইশতিহারের মতো ঘটনা। আমরা চাই পদক্ষেপগুলো কোনটা কোন সময়ে হবে সেটা জানতে। শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংস্কার বা সারাদেশের স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কোনটা কোন সময় করবে সেটা আমরা জানতে চাই। এককথায় রুপরেখা ও লিখিত আশ্বাস আমাদের দিতে হবে। আমাদের আন্দোলন কোনো ডাক্তার, নার্স কিংবা স্টাফের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের আন্দোলন দালাল ও সিন্ডিকেট অনিয়মের বিরুদ্ধে।
রনি বলেন, ডাক্তাররা আমাদের শত্রু না। ইন্টার্ন ডাক্তাররাও আমাদের শত্রু না। নার্সরাও আমাদের শত্রু না। স্টাফরাও আমাদের শত্রু না। তারা সবাই আমাদের বন্ধু। তারা ভালোভাবে ফ্যাসিলিটেট হলে আমাদেরকে ভালো চিকিৎসা দিতে পারবে। আমাদের শত্রু হলো দালাল, সিন্ডিকেটের লোকজন। আমাদের যুদ্ধ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে। মিস ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে। দালালদের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন গড়ে উঠেছে। এইটা মাথায় রেখেই আন্দোলনে যুক্ত হচ্ছে সবাই।
এর আগে স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার দাবিতে সোমবার দুপুরে দুই ঘণ্টা বরিশাল জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রজনতা। আন্দোলনরতরা দুপুর ১২টার দিকে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে যায়। সেখানে গিয়ে সামনের সড়ক অবরোধ করে দুপুর দুইটা পর্যন্ত বিক্ষোভ করে।
এসময় তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা দূর, রোগী হয়রানি ও স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানায়। পাশাপাশি আন্দোলনরত ছাত্রজনতার ওপর হামলার ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেন।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ৯৪