নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ::: বরিশালে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে মারধর করে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ।
জানা যায়, বরিশাল নগরীর বাঘিয়া এলাকার গৃহবধূ নুপুর বেগম, তিনি এক সন্তানের জননী, আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন—বিবাহের পর কিছুদিন স্বামী আরিফ হোসেনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সংসার চলছিল। পরবর্তীতে স্বামী বিদেশ যাওয়ার জন্য বাদী ও তার পিতার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাদীর পিতা এই টাকা দেন। বিদেশে যাওয়ার পর বসতঘর নির্মাণের জন্য শ্বশুর হারুন ফকিরের (৭০) পরামর্শে আরও ৪ লাখ টাকা ধার নেওয়া হয়।
মোট ৯ লাখ টাকা পাওনা ফেরতের জন্য বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও আসামি টাকা না দিতে টালবাহানা করতে থাকেন। বাদীর পিতা মারা গেলে পাওনা টাকা পরিশোধ না করে আসামি নানা অজুহাত দিতে থাকেন।
২০২৫ সালের ১৪ জুন রাত ১১টার দিকে বাদী স্বামীর কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানালে স্বামী পুনরায় ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে আরিফ হোসেন এলোপাথাড়ি লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করেন। মারধরের ফলে বাদীর ডান পা মারাত্মক জখম হয় এবং তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। পরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বাদী অভিযোগ করেন, পরে ২১ জুন নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লাখ টাকা তুলে স্বামী ও শ্বশুরকে দেওয়ার পর স্বামী তাকে একা ফেলে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান।
১৫ জুলাই রাত ৮টার দিকে স্বামী মোবাইল ফোনে নির্দেশ দিলে ননদ ও ননদের জামাই মিলে বাদীকে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বাদী অস্বীকৃতি জানালে তাকে মারধর করা হয়, গলা থেকে ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন (মূল্য আনুমানিক ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং বড় কন্যাকে আটকে রাখা হয়।
এসময় বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয় ও হুমকি দেওয়া হয়—ঘটনা নিয়ে মামলা করলে তাকে ও সন্তানদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।স্থানীয়ভাবে সমঝোতার চেষ্টা ব্যর্থ হলে ৩০ জুলাই কাউনিয়া থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ৭৪