নিজস্ব প্রতিবেদক ::: নানা বিতর্কের জন্ম দেয়া বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জসিম খানের বিরুদ্ধে এবার হয়রানির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক নারী।
মঙ্গলবার (২০ মে) বরিশাল প্রেসক্লাবে সকাল ১১ টায় ফারজানা ইয়াসমীন অনিমা নামের ঐ নারী লিখিত বক্তব্যে বলেন- তার মাতা ফেরদৌসি বেগম বিমানবন্দর থানাধীন ৩৭ নং বকশীর চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিগত ২০২৪ সালের ২০ মার্চ আমার মায়ের স্কুলে গিয়ে লাকুটিয়া এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার হোসেন বাবু এবং তৎকালীন বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য বর্তমানে যুগ্ন আহবায়ক জসিম খান তাদের পছন্দমত ঐ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি করতে বলে। কিন্তু বিষয়টি আইনসিদ্ধ না হওয়ায় তার মাতা এর প্রতিবাদ জানায়। তখন আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার হোসেন বাবু সহ ৮/১০ জন ব্যাক্তি তার মায়ের উপর হামলা চালায়।এসময় তার ছোট বোন মাকে বাচাতে গেলে তার উপরও হামলা হয়। পরে খবর পেয়ে তার ভাই অনিক স্কুলের দিকে যেতে নিলে লাকুটিয়া বাজারে বসে বিএনপি নেতা জসিম খানের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ তার পথরোধ করে তাকে আটকায় এবং পাশ্ববর্তী একটি গোডাউনে নিয়ে আটকে মারধর করে।
তারপর বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও উপস্থিত অভিভাবকরা এগিয়ে আসলে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। ওইদিনই অর্থাৎ ২০ শে মার্চ বরিশাল বিমানবন্দর থানায় তার মাতা ফেরদৌসী বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করে। যার নং ১৭/৫৭ (তাং- ২০/৩/২৪)। এতে আসামি করা হয় লাকুটিয়া এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আখতার হোসেন বাবু, যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম এবং বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন খানকে।
অপরদিকে সন্ত্রাসী হামলায় তার মা, ছোট বোন এবং ভাই তিন দিন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরেও প্রায় তিন মাস অসুস্থ অবস্থায় বাসায় চিকিৎসা নিয়েছে। মামলা করার পর থেকে বাবু ও তার অনুসারীরা একাধিকবার আমার পরিবার ও আমাকে হুমকি ধামকি দিয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে বিএনপির বরিশাল মহানগরের যুগ্ন আহবায়ক জসিম খান তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। একই সাথে তার উপর প্রতিশোধ নিতে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদারকে হত্যা চেষ্টায় দায়ের করা একটি মামলায় ভুক্তভোগীর ভাই অনিককে ৬৯ নং এজাহার নামীয় আসামি এবং ভগ্নিপতি মেহেদিকে ৮০ নম্বর আসামি করা হয়। এটা শুধুমাত্রই প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে বিএনপি নেতা জসিম খান করেছেন বলে দাবী করেন ভুক্তভোগী ঐ নারী।
তিনি আরো বলেন- ৫ আগষ্টের পর বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জসিম খানের শেল্টারে বর্তমানে লাকুটিয়া এলাকার সকল আওয়ামী লীগের লোকেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা বিভিন্ন দোকানপাট থেকে চাঁদাবাজি করে তার একটি অংশ জসিম খানকে প্রদান করে। এখন বিভিন্নভাবে তার মাকে সহ পুরো পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। যাতে করে আমরা জসিম খানের নামে মামলা তুলে নেই। এমনকি বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে পিছন দিক থেকে ট্রাক চাপা দিয়ে মেরে ফেলা হবে বলে জসিম খান লাকুটিয়া বাজারে বসে প্রকাশ্যে বলেছে বলেও অভিযোগ করেন ঐ নারী।
সংবাদ সম্মেলন করে ঐ নারী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নিকট আমার পরিবারের নিরাপত্তা ও আশ্রয় চাওয়ার পাশাপাশি তার পরিবারের সাথে কোন অঘটন ঘটলে তার দায়ভার জসিম গ্রুপের উপর চাঁপান ঐ নারী।
তবে এ বিষয়ে জানতে মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জসিম খানের মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি বলেন, ঐ মেয়ের মা স্কুলের টাকা আত্মসাৎ করেছিল তার প্রতিবাদ করায় মামলা করেছে। আর তার ভাই (অনিমা) যুবলীগের কর্মী সমর্থক। এ জন্য বিএনপির মামলায় আসামী হয়েছে এক্ষেত্রে আমার কোন হাত নেই। বিগত দিনে যাদের প্ররোচনায় একটি গ্রুপ মানববন্ধন করেছে তাদের প্ররোচনায় এ সংবাদ সম্মেলন বলে দাবী করেন জসিম খান।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ৪২