ভোলা প্রতিনিধি ::: ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন রুটসহ রাজধানী ঢাকাগামী শতশত যাত্রীদের ভিড় থাকে। এসব যাত্রীদের চোখে ধুলো দিয়েই যেন নিরবে চাঁদাবাজি করছেন ঘাটটির ইজারাদার।
যাত্রীদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে ইলিশা ঘাট ইজারাদার ট্রলার ভিড়তে দিচ্ছেন। এ ছাড়া ঘাটের ইজারাদার মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়ের পাশাপাশি তাঁদের হয়রানি করছেন। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসন ভূমিকা নিচ্ছে না।
এদিকে ঘাটের সাথেই বড় সাইনবোর্ডে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃক একটি আদায়যোগ্য শুল্ক হারের তালিকায় টার্মিনাল টিকেট মূল্য ৫টাকা থাকলেও বুধবার (৯ জুলাই) বরিশাল ক্রাইম নিউজের সাংবাদিকের চোখে ধরা পড়ে এক ভিন্ন চিত্র। টার্মিনালে প্রবেশ করা যাত্রী প্রতি নেওয়া ১০টাকা হলেও বিনিময়ে দেওয়া হচ্ছে না কোন টিকেট। যাত্রীগণ ৫-এর জায়গায় ১০টাকা দিয়েও টিকেট পাবে না কেন প্রশ্ন যাত্রীদের। কিন্তু মেলেনি সদুত্তর।
বলা যায়, শুধু নিরবেই নয় এ যেন প্রকাশ্য চাঁদাবাজি।
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, ইলিশা ঘাট থেকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে ফেরি, সিট্রাক ও লঞ্চ চলাচলের পাশাপাশি ছোট-বড় ট্রলারে যাত্রীরা চলাচল করছে। প্রতিটি ট্রলার, ফেরি আর লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করছে। নৌযানে উঠতে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।
দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা বলেন, ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে চলাচলকারীদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এ নৌপথে যে পরিমাণ নৌযান চলাচল করার কথা, তা করছে না। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁদের ট্রলারে চলাচল করতে হচ্ছে। এ নৌপথে সব সময় বেশি ভিড় থাকে। তবে প্রতি ঘণ্টায় লঞ্চ কিংবা সিট্রাক ছাড়া দরকার। সেখানে চলছে চারটি সিট্রাক ও দুটি লঞ্চ। এসব লঞ্চ-সিট্রাক প্রতিদিন মাত্র একটি রাউন্ড ট্রিপ দিচ্ছে। অর্থাৎ একবার ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীর হাট ঘাটে যাচ্ছে। যাত্রী নিয়ে আবার ভোলার উদ্দেশে চলে আসছে। ভাড়াও নিচ্ছে বেশি। আর ঘাটেও ৫ টাকার ভাড়া দ্বিগুন দিতে হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেও বিপদ, লাঞ্ছিত হতে হয় ঘাট শ্রমিকদের হাতে।
আরেক যাত্রী বলেন- ইলিশা লঞ্চঘাটের ইজারাদার যাত্রীদের অবৈধ নৌযানে লক্ষ্মীপুর পাঠাচ্ছেন। এসব খোলা ট্রলারে যাত্রীরা বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে ও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। এ ছাড়া সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৫ টাকার ঘাট টিকিটের পরিবর্তে ১০ টাকা নিচ্ছেন কিন্তু টিকিটও দিচ্ছেন না। যাত্রীদের কাছে টিকিটের দাম বেশি নেওয়া ছাড়াও যাত্রীদের হাতে বহন করা ব্যাগের জন্য আলাদা টোল দিতে হচ্ছে ইজারাদারের লোকজনকে। এ ছাড়া লঞ্চেও কোনো নিরাপত্তা নেই। প্রায়ই চুরি হয়।
ঘাট ইজারাদার বলেন, তাঁরা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সব আইনকানুন মেনেই ঘাট পরিচালনা করছেন। তাঁরা কোনো অবৈধ নৌযান চালাচ্ছেন না। যাঁরা অবৈধ যানবাহন চালাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে তাঁর কোনো লেনদেন নেই।
বিআইডব্লিউটিএর ভোলা নদীবন্দরের উপপরিচালক রিয়াজ হোসেন বলেন, ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে বিভিন্ন অনিয়ম দূর করতে তাঁদের অভিযান অব্যাহত আছে। ইজারাদারের বিরুদ্ধে ৫ টাকার টিকিট ১০ টাকা নেওয়ার প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ৩০