• ৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ থেকে উত্তরে যেভাবে যায় মাদক

"আলোকিত সংবাদ ডেস্ক"
প্রকাশিত জানুয়ারি ১০, ২০২৫, ০২:৫৬ পূর্বাহ্ণ
দক্ষিণ থেকে উত্তরে যেভাবে যায় মাদক
সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর দেশজুড়ে মাদক পাচারের রুট পরিবর্তন করেছেন মাফিয়ারা। সীমান্ত এলাকায় বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার পাশাপাশি পরিবহনের ক্ষেত্রে তারা নদী ও আকাশপথ ব্যবহার করছেন।

খাদ্যদ্রব্য ডিক্লেয়ার করে তারা বিদেশ থেকে আনছেন মাদকের পার্সেল।

এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই ব্যবহার হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ডাক। ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিলের মতো প্রচলিত মাদকদ্রব্যের বাইরে কুশ, এমডিএমএ, এলএসডি, ক্রিস্টাল মেথ ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ বেড়েছে কর্তৃপক্ষের মাঝে। কারণ এসব মাদকের গ্রাহক কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী সন্তানরা।

মাদকের অর্থ জোগাড় করতে তারা ভয়ংকর অপকর্মে জড়াচ্ছেন। মাদক কারবারিরা ছোট ছোট জাহাজে করে মাদকের চালান প্রথমে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নিয়ে আসছেন। সেখান থেকে ফেনী হয়ে চাঁদপুরে নিয়ে যাচ্ছেন। তারপর পৃথক লঞ্চে করে ঢাকা, শরীয়তপুর এবং বরিশাল অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখান থেকে আনলোড করে মাদকের চালান নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরবঙ্গে। এ ক্ষেত্রে মাদক কারবারিরা ট্রেন এবং বাস ব্যবহার করছেন।

হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশ, র‌্যাবের মতো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে টালমাটাল অবস্থা বিরাজমান থাকার সুযোগ নিচ্ছেন মাদক কারবারিরা। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে জামিনে বের হয়ে লিপ্ত হচ্ছেন সেই আগের পেশায়।

ঢাকা শহরের বিভিন্ন অংশেও এখন মাদকের বিক্রি ও ব্যবহার বেড়েছে। শুধু বস্তি এলাকায় নয়, অভিজাত এলাকায় এখন ফেরিওয়ালা

হকাররাও মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ছেন। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদেরও এখন মাদক কারবারিরা পাত্তা দিচ্ছেন না। এ ছাড়া ঢাকায় এখন অন্যান্য ব্যবসার মতো মাদকের কারবারও হাতবদল হয়েছে। এখন যারা কারবার চালাচ্ছেন তারা রীতিমতো বেপরোয়া। তবে এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) উপ-মহাপরিচালক কর্নেল শরীফুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবির প্যাট্রল আগের তুলনায় অনেক বাড়ানো হয়েছে। অনেক সফলতা এসেছে এরই মধ্যে। শিগগিরই আরও ইতিবাচক কিছু দেখতে পাবেন।

একাধিক সূত্র বলছে, কুমিল্লা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর এবং রাজশাহী এলাকায় মাদক ও চোরাচালানের চিহ্নিত পয়েন্টগুলো আগের মতোই সক্রিয়। হেরোইন পাচারের জন্য রাজশাহীর গোদাগাড়ী রুট মাদক কারবারিদের কাছে খুবই পছন্দের হলেও বর্তমানে সেখানে অতিমাত্রায় কড়াকড়ির কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ এবং চরবাকডাঙ্গা পয়েন্ট ব্যবহার করছেন তারা। আগের মতোই ফেনসিডিল আসছে রাজশাহীর চারঘাট, ইউসুফপুর, টাঙ্গন এবং মেট্রোপলিটন এলাকার পয়েন্ট কাশিয়াডাঙ্গায়।

পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ফেনসিডিল আসছে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এবং স্থলবন্দর হিলিসংলগ্ন এলাকার অন্তত চারটি পয়েন্ট দিয়ে। কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্ত থেকে মাঝে মাঝেই ঢুকছে ইয়াবা। জয়পুরহাট দিয়ে আসছে পেথিডিন অ্যাম্পুল। মাদক কারবার সংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, গত ছয় মাসে যে পরিমাণ মাদক দেশে প্রবেশ করেছে তাতে আগামী এক বছর নতুন কোনো চালান দেশে প্রবেশ না করলেও মাদক সেবনকারীরা সংকটে পড়বে না।