নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: ঈদের ছুটিতে বরিশালের দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণপ্রেমিদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে আছে। বিশেষ করে বেলপার্ক ও কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি স্থানে ছুটছেন ভ্রমণপ্রেমিরা। নদীর তীরবর্তী প্রায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে নতুন তৈরি করা বেড়িবাঁধের ওপর দৃষ্টিনন্দন এলাকায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী বেলস্ পার্ক, নগরীর মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী ত্রিশ গোডাউন বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ও বেলতলা, শায়েস্তাবাদ, লামছড়ি শিশু পার্ক এলাকায় দর্শনার্থীদের ঢল ছিল চোখে পড়ার মতো।
ভ্রমন পিপাসুরা জানিয়েছেন, নদীর ওপর মস্ত খোলা আকাশের সোনালি সন্ধ্যা উপভোগ করতে পারাটাই আনন্দ। তাই তো পরিবার নিয়ে তারা নদীর তীরে দীর্ঘ সময় কাটান। এছাড়াও নৌকায় চড়ে শান্ত কীর্তনখোলায় কলকল বয়ে চলে পানির গতির সঙ্গে মাঝির বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ যেকোনো বিনোদন প্রিয় মানুষকে মুগ্ধ করে তুলছে। কেউ কেউ চাদের মায়াবী আলোতে গভীর রাত পর্যন্ত উপভোগ করছেন নয়নাভিরাম এ সৌন্দর্য। দর্শনার্থীদের বাড়তি বিনোদন হিসেবে নৌকা-ট্রলার ও সি-বোট রয়েছে প্রমোদ ভ্রমণের জন্য।
আকাবাঁকা বহমান এ নদীতে প্রিয়জন বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভ্রমণের জন্য ঘণ্টা হিসাবে টাকা দিতে হয়। একটু দূরবর্তী দপদপিয়া সেতু, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বেলতলা ফেরিঘাটের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য আগ্রহীরা ট্রলারে (ইঞ্জিন চালিত নৌকা) ভ্রমণ করে থাকেন। নদীর পশ্চিম তীরের পুরোটা জুড়েই দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগীয় সদর বরিশাল নগরী। কীর্তনখোলা নদীতে বসে ব্যস্ত শহরের দিক থেকে উল্টো বিপরীত দিকে চোখ ঘুরালেই দেখা যায় ছায়াঘেরা এক গ্রামীণ জনপদ। বন-বনানীতে ঠাসা সবুজের সমারোহ। ওপরে দিগন্ত ভরা সাদা ও নীলের ছোয়া।
দর্শনার্থীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, নদীর তীরে কোনো কৃত্রিম সৌন্দর্য নেই। সবকিছুই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। সুন্দরের সবটুকুই যেন সৃষ্টিকর্তার দান। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সেখানে কোনো মানুষের হাতের ছোঁয়া নেই।
ঈদের ছুটি কাটাতে ঢাকা থেকে আসা আনিসুল কিবরিয়া জানান, বরিশালে তেমন বিনোদন স্পট নেই। তাই অনেকের মতোই বিকাল বেলা পরিবার-পরিজন নিয়ে হাওয়া খেতে নদীর তীরে এসেছেন।
নদীর তীরে ঘুরতে আসা শারমিন আক্তার জানান, সন্তান সহ বাড়ির প্রিয়জনদের নিয়ে নদীর তীরে সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছেন। ঈদের দিন থেকেই আত্মীয়স্বজনের বাসা-বাড়িতে যাওয়া আসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সন্তানদের নিয়ে একান্তে ঈদের ঘুরাঘুরি করতেই বেছে নিয়েছেন নদীর তীরবর্তী নিরিবিলি স্থানকে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মেট্রোপলিটনের আওতায় যেসব বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে, তাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সাবেক সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা জানান, টহল পুলিশ কিংবা বিনোদন কেন্দ্রে দায়িত্বরতরা ২৪ ঘণ্টা অবস্থান করতে পারেন না। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থানের সময় বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রগুলো যেসকল প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তাদের নিরাপত্তাকর্মী কিংবা আনসার সদস্য নিয়োগ করলে নানান অপ্রীতিকর ঘটনা কমে আসবে। পাশাপাশি যানবাহন রাখার জন্য নিয়ম মাফিক পার্কিং স্থান তৈরি করতে হবে।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ১৬৬