• ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চরমোনাইতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষকের কোচিং বাণিজ্য!

"আলোকিত সংবাদ ডেস্ক"
প্রকাশিত নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ২০:০৬ অপরাহ্ণ
চরমোনাইতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষকের কোচিং বাণিজ্য!
সংবাদটি শেয়ার করুন....

শহীদুল্লাহ সুমন ::: বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের ৩৭ নং বুখাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কোচিং সেন্টারে রুপান্তিত। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজেই এই কোচিং বাণিজ্যের পরিচালক। কোচিং ক্লাসের জন্য বিদ্যালয়ে একটি রুম নির্দিষ্ট করে রেখেছেন প্রধান শিক্ষক শিরিন আকতার। এতে সহযোগীতা করছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এমনটাই জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক শিরিন আকতার। এদিকে সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কক্ষে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন কোমলমতি শিশুদের নিয়ে কোচিং সেন্টার করেছে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিক মো: শহিদুল ইসলাম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকল কোচিং বাণিজ্য অবৈধ ঘোষণা থাকলেও শিক্ষা অফিসের ছত্রছায়ায় বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে পাঠদানের সময় শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে- ওই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস রুমে কোচিং বাণিজ্য পরিচালনা করেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো: শহিদুল ইসলাম। শহিদুল ইসলামকে সহযোগিতা করেন ৩৭ নং বুখাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিন আকতার। তার কাছে কোচিং করলে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায় বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

স্থানীয়রা অভিযোগ- ৩৭ নং বুখাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বসে সহকারি শিক্ষক শহিদুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল পাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। স্কুল রুমে কোচিং বাণিজ্য করতে রুমের ভাড়া দিতে হয় না এবং বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় না, তাই তারা কোচিং বাণিজ্য করে হাজার হাজার টাকা আয় করছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা সময় মতো আসে না, তারা তাদের ইচ্ছা মতো আসনে, যখন তখন স্কুল ছুটি দিয়ে চলে যান।

স্থানীয়রা আরও বলেন, ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসে ৫শত টাকা করে আদায় করছে সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। এখানে কোচিং করলে সেখানকার পরীক্ষার ফি দিতে হয় শিক্ষার্থীদের, এমনকি তার পছন্দের গাইড কিনতে বাধ্য করেন সহকারি শিক্ষক শহিদুল ইসলাম।

শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা সকাল ৮ টায় আসি শহিদুল স্যার আমাদের কোচিং করায়। আমাদের কাছ থেকে মাস শেষে ৫০০ টাকা করে নেয়।

এ ব্যাপারে সহকারি শিক্ষক শহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন- আমিতো স্কুলের মালামাল ক্রয় করতে বরিশালে এসেছি। এ কথা বলেই তিনি মুঠোফোনটি প্রধান শিক্ষক শিরিন আকতারকে ধরিয়ে দেন। এসময় বিদ্যালয়ে কোচিং বাণিজ্যের বিধান রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন- বিধান আছে কিনা আপনি টিও ফয়সাল স্যারের কাছ থেকে জেনে আসেন। তিনি সব জানেন। তিনিই পড়াতে বলছেন। এখানে গরীব বাচ্চারা পড়ে, তারাতো ঠিক মতো টাকাই দেয় না। সে নিয়ে আপনার এতো ম্যাথা কিসের?

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক শিরিন আকতার তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলেন- হ্যা টাকা নেয়া হয়। আপনার সমস্যা কোথায়? এখন আপনাকে বকরা দিতে হবে? সারাদেশে কোচিং বাণিজ্য চলে তাদের গিয়ে ধরেন। আপনি এ সব ফালতু কথা অন্য কোথাও বলবেন এ সব কথা নিয়ে বুখাইনগর স্কুলে সামনে আসবেন না। এ সব আমরা পাত্তা দেই না।

ক্লাস চলাকালীন সময় আপনাদের বরিশালে কাজ কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধান শিক্ষক বলেন- তাতে আপনার দরকার কি? এ জবাব কি আমি আপনাকে দেব। আপনাকে (প্রতিবেদক) ‘তুই’ বলা উচিত। এ সব লোককে পাত্তাই দেয়া উচিত না।

এ ব্যাপার সদর উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন- পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কোচিং বা অতিরিক্ত ক্লাস নিতে বলা হয়েছে, তবে কোন টাকা-পয়সা নেয়ার বিধান নেই। যদি কোচিংয়ের নামে শিক্ষকরা টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফয়সল জামিল বলেন- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোচিং নেয়ার কোন বিধান নেই। তবুও কেউ কোচিং করা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোঃ আক্তারুজ্জামান জানান, শিক্ষরা কখনও প্রাইভেট পরাতে পারেন না। তাতে বিদ্যালয়ের ভিতরে বা বাহিরে হউক