অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা। শুল্ক কমানোসহ সরকার নানাভাবে সেই চেষ্টা করেও যাচ্ছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, মজুদদার ও বিভিন্ন ধরনের সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে সরকারের সেসব প্রচেষ্টা খুব একটা কাজে আসছে না। এই অবস্থায় সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যথার্থই বলেছেন, সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকার সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে থাকবে এবং বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে সরকার বিকল্প কৃষিবাজার চালু করবে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেগুনবাড়ী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজার বিশেষজ্ঞরাও মনে করেন, সিন্ডিকেট ভাঙা না গেলে বাজার কখনো নিয়ন্ত্রণে আসবে না, যৌক্তিক হবে না। দেখা যায়, হঠাৎ করেই বাজারে পণ্যের সংকট তৈরি হয়ে যায়। তখন বিক্রেতারা ইচ্ছামতো দামে সেসব পণ্য বিক্রি করেন।
আর দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের অজুহাতেরও অভাব হয় না। বড় ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেন। যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিসহ আরো অনেক অজুহাত দেওয়া হয়। কিন্তু এসবের কারণে কোন পণ্যে আমদানি ব্যয় কত বেড়েছে এবং কত দামে বিক্রি হচ্ছে, সেই ব্যাখ্যা দেওয়া হয় না।
বাস্তবে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে যখন কোনো পণ্যের দাম কমে, তখনো বাংলাদেশে সেই পণ্যের দাম বাড়ে। সম্প্রতি ডিমের দাম নিয়ে রীতিমতো তেলেসমাতি হয়েছে। এখানেও অজুহাত গরমে, বন্যায় ডিমের উৎপাদন কমে গেছে। কিন্তু ভারত থেকে কিছু ডিম আসায় এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিশেষ বার্তা দেওয়ায় ডিমের দাম ডজনে ৩০ টাকার মতো কমে গেছে।
আগের তুলনায় এখন রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি অনেক কম।
চাঁদাবাজি নেই বললেই চলে। তার পরও কিছু পণ্যের মূল্য না কমার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই। উল্টো কিছু পণ্যে দাম আরো বাড়ছে। একটু একটু করে বাড়ানো হচ্ছে চালের দাম। গত সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) বেড়েছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। শুল্কছাড়ের পর প্রচুর পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। হিলি স্থলবন্দর সংলগ্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। অথচ রাজধানীর বাজারগুলোতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
আমরাও মনে করি, বাজার নিয়ন্ত্রণে নানা ধরনের সিন্ডিকেটের কারসাজি বন্ধ করতে হবে। পণ্যমূল্য ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে আনতে হবে।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ১১১