• ৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানবিক সাজ্জাদ ছুটছেন দুর্বার

"আলোকিত সংবাদ ডেস্ক"
প্রকাশিত জুন ২০, ২০২৫, ১২:০২ অপরাহ্ণ
মানবিক সাজ্জাদ ছুটছেন দুর্বার
সংবাদটি শেয়ার করুন....

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল :: সেবাপ্রত্যাশীদের স্যার সম্বোধন করে আলোচনায় আসা এই কর্মকর্তার মানবসেবাই যেনো ধর্ম

স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের শাসনামলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যখন সেবামূলক কর্মকান্ড বাদ দিয়ে কর্মস্থলে আধিপত্য বিস্তার করাসহ অর্থ ইনকামের ধান্ধায় মত্ত ছিলেন, ঠিক তখনই ব্যতিক্রর্মী রূপে আবির্ভুত হয়েছিলেন বরিশাল সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ পারভেজ।

রাজনৈতিক নেতাদের লেজুরবৃত্তি নয়, বরং কিভাবে মানবকল্যাণ করে নিজেকে আলোচনায় রাখা যায় কর্মক্ষেত্রে সবটুকু দিয়ে তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন. করছেন। এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনসাধারণের মুখে নিজেদের প্রশংসা শোনার পাশপাশি তাদের স্যার সম্বোধন না করাতে ক্ষুব্ধ হতেন, তখনই তৎকালীন প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ উল্টো সেবাপ্রত্যাশীদের স্যার ডেকে সেই রীতি কিছুটা হলেও ভাঙতে পেরেছিলেন।

অবশ্য এর জন্য তাকে বেশ ঝুট-ঝামেলায়ও পড়তে হয়, তার এমন মানবিক ও পেশাদার আচরণকে আওয়ামী লীগ শাসনামলে অনেকেই বাকা চোখে দেখেছেন এবং রাগে-ক্ষোভে ফুঁসেছেন। পাশাপাশি চালিয়েছেন নানামুখী ষড়যন্ত্র কি ভাবে এই আলোচিত কর্মকর্তাকে বিতর্কিত করে দাবিয়ে করে রাখা যায়। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে সাজ্জাদ এতটাই স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন ছিলেন, যে তাকে বেকায়দায় ফেলা অতটা সহজ হয়নি।

৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে একটি পক্ষ তাকে আওয়ামী লীগের দোষর আখ্যা দিয়ে মানবিক কর্মকান্ডের লাগাম টানতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত তাতে ব্যর্থ হয়েছে। এনিয়ে কর্মকর্তা সাজ্জাদ প্রথমে কিছুটা কিছুটা ভীত বা বিব্রত হলেও কর্মস্থলে তার মানবসেবা অব্যাহত রেখেছেন এবং আগামীতেও এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ডেনীয় বিখ্যাত লেখক লেক হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দারসেন একটি উক্তিতে বলেছিলেন, ‘মানবতার প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতি একটি মহান মূল্যবোধ, যা সমাজকে বদলে দিতে পারে।’ বরিশাল সমাজসেবার আলোচিত এই কর্মকর্তা সাজ্জাদ যেনো সেই রূপকথা জাদুকর হান্সকে অনুসরণ বা অনুকরণ করে দীর্ঘ পথ পরিক্রমা পাড়ি দিয়ে এক অন্ধকার জনপদকে আলোকিত করার স্বপ্নে এগিয়ে চলছেন দুর্বার।

সূত্র জানিয়েছে, বরিশাল সমাজসেবার কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ কর্মক্ষেত্রে দুর্নীতি বা অনিয়ম করেছেন এমন উদাহরণ নেই। বরং তার ঝুড়িতে আছে মানবসেবার বদৌলতে একাধিক পুরস্কার ও খ্যাতি, যা নিয়ে তিনি সময় বিশেষ গর্ব করেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে এই কর্মকর্তার অতীত নেতিবাচক কর্মকান্ড খুঁজতে গিয়ে শুধু পাওয়া গেল মানুষের পাশে থাকা এবং তাদের যথাস্বাধ্য সেবার এক অন্যান্য উদাহরণ। জানা গেছে, এই মানবিক কর্মকর্তাকে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে পদোন্নতি দিয়ে প্রবেশন অফিসার থেকে সহকারি পরিচালক পদমর্যাদা দিয়ে দায়িত্ব বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরেও তিনি অতীত ধারাবাহিকতা বজায় রক্ষা করে চলছেন এবং সেবাপ্রত্যাশীদের মন জয় করতে কখনও কখনও নিজেও ব্যক্তিগতভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।

বরিশালের স্থানীয় পত্র-পত্রিকাগুলো বিভিন্ন সময়ে সাজ্জাদ পারভেজের ইতিবাচক কর্মকান্ড তুলে ধরে মোটা দাগে শিরোনাম করে। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে তাকে মানবিক কর্মকর্তা অভিহিত করে কিছুসংখ্যক লোককে সহযোগিতার কথা বলা হলেও এর ব্যাপ্তি আরও সুবিশাল। সাজ্জাদ পারভেজ প্রচারবিমুখ কর্মকর্তা হওয়ায় মানবিক কল্যাণমূলক অনেক কর্মকান্ডই আলোচনায় আসেনি।

সূত্র জানায়, সাজ্জাদ পারভেজ প্রবেশন কর্মকর্তা থাকাকালীন দিন-রাত সমান্তরাল ছুটেছেন চলেছেন। এবং অসহায় মানুষকে সরকারি সহায়তা দেওয়াসহ বিভিন্ন উপায়ে তাদের কাছাকাছি থেকেছেন। এমনকি সরকারিভাবে সম্ভবপর না হলেও নিজের তরফে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, রাস্তা থেকে অসুস্থ বা বিকারগ্রস্ত মানুষকে তুলে নিয়েও তিনি চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন, যারা এখন সুস্থতার সাথে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। পাশাপাশি ছিন্নমূলকে সহায়তা করাসহ কারাবন্দি জীবন কাটিয়ে নি:স্ব এমন অসংখ্য মানুষকে খুঁজে খুঁজে বের সরকারি সহায়তা পৌঁছে দিয়ে তাদের ন্যূনতম ইনকামের পথ বাতলে দেন।

এই মানবিক কর্মকর্তা অতীতের ইতিবাচক কর্মকান্ডের ঢোল না বাজিয়ে নীরবে-নিভৃতে এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান। এবং অবসরগ্রহণের পরেও নিজেকে মানবকল্যাণে বিলিয়ে দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প নিয়েছেন। এমন একজন স্বপ্নবাজ মানুষকে ৫ আগস্টের পর সুবিধাবাদীদের বেকায়দায় ফেলার প্রয়াস ভালো ভাবে নেয়নি বরিশালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং সুশীলসমাজ। বরং ওই অপপ্রচারে সাজ্জাদ পারভেজের জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি করেছে এবং তাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

অভিন্ন তথ্য দিয়ে বরিশাল সমাজসের কজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সাজ্জাদ পারভেজ তার কাজকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। রাজনৈতিক অনেক চাপ থাকা সত্ত্বেও তিনি অসহায়-দরিদ্র মানুষের সেবা সহযোগিতা দিয়ে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে যখনই তিনি সেবাপ্রত্যাশীদের স্যার সম্বোধন করা শুরু করেছেন এবং তার দপ্তরে এ সংক্রান্ত একটি লেখা টেবিলে রেখেছেন তখন অনেক কর্মকর্তার গাত্রদাহ শুরু হয়। ওই সময় সাজ্জাদের সোজাসাপ্টা উত্তর ছিল, প্রজাত্বন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাধারণ মানুষ স্যার বলবে না, বরং সেবাপ্রত্যাশীদের কর্মকর্তারা স্যার হিসেবে অভিহিত করবেন। অবশ্য সাজ্জাদ পারভেজের এমন উক্তি সেই সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরালও হয়েছিল, যা নিয়ে সাংবাদিকেরা লেখালেখিও কম করেননি। মাঠপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তার এমন মনভাব সেবাপ্রত্যাশীদের সুবর্ণ সুযোগ যেমন তৈরি করেছিল, তেমনই অভিজ্ঞ বা বোদ্ধমহলকে পুলোকিত করেছিল।

কর্মগুণের বদৌলতে সমাজসেবার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাও সাজ্জাদ পারভেজকে মানবিক অফিসার হিসেবে খ্যাতি দিয়েছেন। তার ভাষায়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে কর্মকর্তারা সাধারণত রাজনৈতিক নেতাদের তৈলমর্দন করাসহ অর্থ ইনকামের ধান্ধায় মত্ত ছিলেন। বিপরিতে সাজ্জাদ পারভেজ দিন-রাত সমান্তরাল ছুটে চলেছেন শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রাপ্ত। এমনকি অসহায় মানুষকে সরকারি সহায়তা পৌঁছে দিতে ছুটেছেন দুর্বার। কখনও কখনও সরকারি বরাদ্দ না থাকায় ব্যক্তিগতভাবেও তিনি সহায়তার হাত প্রসারিত করেছেন, এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে। এ কথায় বলতে গেলে, তিনি যেনো ডেনীয় বিখ্যাত লেখক লেক হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দারসেনকে অনুকরণ করে মানবকল্যাণের পথ সুগম করতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। এই ছুটে চলা এবং চাকরি শেষে নিজেকে মানবসেবায় আরও বিস্তৃত করার সংকল্প সাজ্জাদ পারভেজকে অন্যান্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে এমন, মন্তব্য পাওয়া গেছে।

বলা বাহুল্য যে, করোনা মহামারির প্রাক্কালে প্রবেশন অফিসার থাকাকালীন সাজ্জাদ জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাজ করেছেন। সরকারি বরাদ্দ অসহায়-দরিদ্র মানুষের বাসায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। এবং মহামারিতে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে শহরের আনাচে-কানাচে থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলোতেও ছুটে বেরিয়েছেন। এই মানবিক এবং কর্মক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে সমাজসেবার আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে মানবসেবা করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া জরুরি, মন্তব্য পাওয়া যায়।

অবশ্য কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বড় দায়িত্বপ্রাপ্তি নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন। তার ভাষায়, তিনি সরকারের যে চেয়ারেই থাকবেন না কেনো, সেখান থেকে আলো ছড়িয়ে যাবেন। এবং আজীবন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে থাকার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।’