
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বাকেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতির জমজমাট ব্যবসা।হাতে গোনা দু,একটি সমিতির উপজেলা সমবায় অফিস থেকে লাইসেন্স থাকলেও অধিকাংশ সমিতিরই লাইসেন্স, নিবন্ধন, রেজিষ্ট্রেশন নম্বর কিছুই নেই।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সহ পৌরসভার পাড়া মহল্লায় নামে বেনামে সঞ্চয় ও ঋনদান সমিতির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত সুদ ও দাদন ব্যবসায় জড়িত হচ্ছে। এই সব সমিতির গলাকাটা সুদের খপ্পরে নিঃস্ব হওয়ার পথে অনেক দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত,পরিবার।
এসব সমিতির আর্থিক লেনদেনের পাস বইয়ের পাতায় সমবায় সমিতির নীতি আদর্শ লেখা থাকলেও এরা মুলত সরাসরি সুদের ব্যবসার সাথে জড়িত এক একটি চক্র।দৈনিক সঞ্চয় , মাসিক ডিপি এস,স্হায়ী আমানত সংগ্রহের আড়াল সুদের ব্যবসা এসব প্রতিষ্ঠানের মুল লক্ষ্য।
সুদের টাকা লেনদেন ও আদায়ের জন্য এসব সঞ্চয় ও ঋনদান সমিতির মাঠ পর্যায়ে রয়েছে কর্মী ।এসব কর্মীরা দৈনিক ঋনের কিস্তি আদায়ের পাশাপাশি মাসিক, সাপ্তাহিক হারে সুদে দেওয়া টাকা উত্তোলন করে।
শতকরা ১০ টাকা সুদে এসব প্রতিষ্ঠান দরিদ্র, মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে ঋন দিয়া থাকে। ঋনের জামানত হিসাবে অলিখিত সাদা স্ট্যাম্প,রেফ, এবং স্বাক্ষর যুক্ত অলিখিত চেকের পাতা নিয়ে থাকে।
যার ফলে অলিখিত সাদা চেকের কারনে সুদ কারবারির ভুয়া, মিথ্যা মামলার শিকার হচ্ছেন অনেক নিরীহ মানুষ। গলাকাটা এসব সুদ ব্যবসায়ীর থাপ্পরে পড়ে অনেক পরিবার ইতিমধ্যে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় এসব অনিবন্ধিত সমিতির সুদ কারবারীদের চক্রবৃদ্ধি সুদের খাঁচা থেকে সহজে কেউ বের হতে পারছে না।
শতকরা ১০ টাকা হারে সুদে কেউ যদি সুদী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে থাকে তবে প্রতি মাসে তাকে এক হাজার টাকা দিতে হয়। যদি কোন কারনে তিনি সেই মাসের টাকা দিতে না পারে তবে তার সুদ আসল মিলে ১১০০০( এগার) হাজার টাকা হয়ে যায়। এভাবে টাকার অংক নিয়মিত বেড়ে যাওয়ার ফলে এক সময় সুদ গৃহীতার ভিটে মাটি সম্বল হারানোর উপক্রম হয়ে যায়।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল সহ খোদ পৌরসভার ভিতরে রয়েছে একাধিক সুদি ব্যবসায়ীদের কারবার। তাই সুশীল সমাজের দাবি এসব মহাজনদের প্রশাসনিক ভাবে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা।
কেননা স্থানীয় কৃষি পন্য উৎপাদনেও এই সুূদ কারবারি চক্রের দাদন ব্যবসা বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। দেখা যায় অনেক কৃষক ফসল ফলানোর সময় চাষবাসের জন্য বিভিন্ন কৃষি উপকরণ কেনার তাগিদে এ সব সুদ কারবারীদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করে থাকে। যা তাদের উৎপাদিত ফসলের মূল্যের দ্বিগুণ হয়ে যায়। ফলে ফসল বিক্রির টাকায় দেনা পরিশোধ করতে না পারায় কৃষি কাজ ছেড়ে শহরে পাড়ি জমায়।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ৩৮