বানারীপাড়া প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় বির্তকিত ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা ( তহশিলদার) বিমল চন্দ্রকে এবার মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাতে বানারীপাড়া সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র বাদী হয়ে ডিস ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হোসেনকে সুনির্দিষ্ট ও ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে বানারীপাড়া থানায় মারধর ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, সোমবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে শাওন ক্যাবল নেটওয়ার্কের সত্ত্বাধিকারী মোজাম্মেল হোসেনসহ আসামীরা বানারীপাড়া ভূমি অফিসে গিয়ে পৌরসভাভ’ক্ত ৪২ নং মৌজার সৃজিত ৯৩৪ নম্বর খতিয়ানের হাল ৬১৪ দাগের শশ্মান শ্রেণীর জমি বাগান শ্রেণী দেখিয়ে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের হোল্ডিং অনুমোদনের জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্রকে চাপ সৃষ্টি করেন।
এতে তিনি রাজী না হওয়ায় তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করাসহ কিল-ঘুষি ও চড়থাপ্পর মেরে আহত করা হয়। এসময় তার ডাকচিৎকারে অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরা এগিয়ে এলে তাকে খুন-জখমের হুমকি দিয়ে আসামীরা চলে যায়।
অভিযুক্ত মোজাম্মেল হোসেন মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বিমল চন্দ্রের দাবিকৃত ৫০ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় তিনি তার জমির উন্নয়ন কর না নিয়ে নানা অজুহাতে ঘুরাতে থাকেন এনিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছে।
নিছক তাকে হয়রাণির জন্য এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার ওসির দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোমিন উদ্দিন বলেন,ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তাকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে এবং আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বানারীপাড়ায় দায়িত্ব পালন করা সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বিমল চ›ন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ‘ওপেন সিক্রেট’।
তাঁর বিরুদ্ধে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন সময় লিখিত অভিযোগ দিলেও অজ্ঞাত খুঁটির জোরে তিনি বানারীপাড়ায় প্রায় ৪ বছর ধরে বহাল তবিয়তে আছেন।
জেসমিন আক্তার ডালিয়া নামের এক নারীর কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে দীর্ঘদিনেও জমি রেকর্ড করে না দেওয়ায় ওই নারী গত বছরের ১১ নভেম্বর তৎকালীণ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবুজর মোহাম্মদ ইজাজুল হকের কাছে অভিযোগ করেন।
ফলে তিনি ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্রকে তার কক্ষে ডেকে এনে দু’জনের মুখোমুখি করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাকে ভৎর্সনা ও তিরস্কার করেন এবং ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ বিষয়টি তখন সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে ভাইরাল হয়ে যায়। ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এছাড়া গোলাম কবির মৃধা নামের এক ব্যক্তি ১৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে জাল দলিলের সাহায্যে তাদের বানারীপাড়া পৌর শহরের জমি অন্যদের নামজারি করে দেওয়ার অভিযোগ এনে গত ২০ এপ্রিল সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা বিমল চর্ন্দের বিরুদ্ধে বরিশাল জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। জানা গেছে, বিষয়টি বর্তমানে তদন্তনাধীন রয়েছে।
সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ ৯১