• ১২ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বর্তমান সরকার রিজার্ভ বাড়িয়েছে, ব্যাংক সেক্টর সচল করছে:শফিকুর রহমান

"আলোকিত সংবাদ ডেস্ক"
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪, ১৮:০৫ অপরাহ্ণ
বর্তমান সরকার রিজার্ভ বাড়িয়েছে, ব্যাংক সেক্টর সচল করছে:শফিকুর রহমান
সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‌‘বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়েছে। একইসাথে ব্যাংক সেক্টরও আস্তে আস্তে সচল করছে। কিন্তু জাতির প্রত্যাশা আরও অনেক বেশি।’ তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির চাকাকে আরও গতিশীল করতে সরকারকে আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’

আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় যশোর ঈদগাহ ময়দানে যশোর জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে কর্মীসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক ও মাওলানা আজীজুর রহমান, জামায়াতের ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও নড়াইল জেলা শাখার আমিরসহ যশোর জেলা জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘দেশকে নাকি তারা উন্নয়নের মহাসড়কে উঠিয়ে রোল মডেল বানিয়েছিল। অথচ এখন চারদিকে হাহাকার। মিল, ফ্যাক্টরি, ইন্ডাস্ট্রির মালিকরা তাদের কর্মচারিদের বেতন দিতে পারছে না। সরকারি ইন্ডাস্ট্রি সব লেআউট হয়ে পড়ে আছে। সৎ ব্যবসায়ীদের ব্যবসা লাটে ওঠার উপক্রম। ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের পুঁজি দিতে পারছে না। সমস্ত ব্যাংক ফোকলা করে পেট খালি করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে।’

প্রধান অতিথি বর্তমান সরকারের রিজার্ভ বাড়ানো ও ব্যাংক সেক্টরকে সচল করার প্রশংসা করলেও নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্য ও সিন্ডিকেট বিদ্যমান থাকার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘বাজারে এখন আগুন, মানুষ পেট ভরছে আগুন দিয়ে’। তিনি অভিযোগ করেন, ‘আগের সিন্ডিকেটগুলো এখনও ভাঙতে পারেনি সরকার। ক্ষেত্রবিশেষে সিন্ডিকেটের হাত বদল হয়েছে। একজন চাঁদাবাজি করে পেট ভরে পালিয়ে গেছে। আবার কেউ এসে চাঁদাবাজিতে লেগে যাক সেটা আমরা চাই না। কিন্তু দেশ এখনও চাঁদাবাজমুক্ত, দখলদারমুক্ত, জুলুমমুক্ত হয়নি।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘নাগরিকদের মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান নয়, সমতা নয়, ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে জামায়াত।’ তিনি বলেন, ‘অধিকারের জন্য কাউকে হাহাকার করতে হবে না। বিচার বিভাগের মেরুদণ্ড সোজা করে দেওয়া হবে। রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকেও দ্বিতীয় কোন চোখে দেখবে না সেই বিচারবিভাগ। ইনসাফ কায়েম করতে পারলে কাউকে অধিকার চাইতে হবে না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হবে খুঁজে খুঁজে যার যার দায়িত্ব তার তার কাছে পৌঁছে দেওয়া।’

দেশের ভেঙে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে শিক্ষা ব্যবস্থার। মাস্টার্স পাশের সার্টিফিকেট নিয়ে যুবক-যুবতীরা দ্বারে দ্বারে চাকরির জন্য ঘুরছে, কিন্তু চাকরি পাচ্ছে না। শিক্ষার যে নৈতিক মান হওয়া, তা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে একেবারে বিদায় নিয়েছে।’

স্বৈরাচার হটানো আন্দোলনে সকল দলের শহীদ, পঙ্গু হয়ে যাওয়া, জেল খাটা ও মামলার শিকার হওয়া সকলের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের দুই হাজারেরও বেশি সন্তান বুকের তাজা রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে আমাদের উন্মুক্ত পরিবেশ দিয়ে গেছে। তাদের রক্তের সাথে যেন আমরা বেইমানী, বিশ্বাসঘাতকতা, গাদ্দারি না করি। তারা বৈষম্য, দুঃশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ দিয়েছে। এখন যদি একই কাজ কেউ করেন, নিঃসন্দেহে তারা ঘৃণিত ও নিন্দিত হবে।’