আলোকিত সংবাদ ডেস্ক :: বরিশাল: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, বাংলাদেশে যা কিছু হবে ছাত্র জনতার রায়ের ভিত্তিতেই হবে। আগামীর বাংলাদেশে পররাষ্ট্রনীতিই হবে ছাত্র জনতার মতামতের ওপর ভিত্তি করে।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (বড় মাঠ) মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঠাকুরগাঁওয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম হিন্দু ধর্মাবলীদের প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনে কে নির্বাচিত হবে তা নাকি নির্ধারণ করে হিন্দু ধর্মাবলী ভাই বোনেরা। তাহলে তাদের কেন নতুন স্বাধীনতার পরেও সীমান্তের দিকে ছুঁটতে হবে।
তাদের এই দুর্বলতা তারা নিজেরাই সৃষ্টি করেছেন। কারণ কোনো কিছু না বুঝে না শুনে, আপনাদের জন্য কে কাজ করছে, সেটি না দেখে, আপনার কথা কে বলছে সেটি না ভেবে, আপনাদের ভোটটি সারা জীবন শুধু একটি মার্কা নৌকার জন্য ফিক্সড করে রেখেছেন।
এই যে ভোটটি নৌকার জন্য ফিক্সড করে রেখেছেন এটাই আপনাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। যখন আপনারা নির্দিষ্ট একটি জায়গার জন্য ফিক্সড হয়ে যান। তখন আপনার যে গুরুত্ব ও মূল্য সেটি কমে যায়।
বাংলাদেশে যা কিছু হবে ছাত্র জনতার রায়ের ভিত্তিতেই হবে। কোনো পরিবার থেকে ও কোনো ফ্যাসিবাদ সিস্টেম থেকে নয় উল্লেখ্য করে সারজিস বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে নাকি মামলা মামলা খেলা চলছে।
টাকার বিনিময়ে মামলায় নাম দেওয়া হয় ও টাকার বিনিময়েই মামলা থেকে নাম কাটা (বাদ) হয়। এই কারণে তো ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থান করেনি। ছাত্র জনতা কোনো নির্দোষকারীর বিরুদ্ধে শাস্তি দেওয়া, হয়রানি ও মামলা দেওয়া তো সমর্থন করে না।
হুঁশিয়ারি দিয়ে সারজিস বলেন, যদি কোনো অন্যায়কে সমর্থন করেন। মনে রাখবেন, এই অন্যায়ের কারণে যে সিস্টেমটি প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সিস্টেমটি দ্বারাই সামনে কোনো একদিন আপনি, আপনার পরিবারের কেউ না কেউ অন্যায়ের শিকার হবে।
দফতরগুলোতে দালাল দিয়ে ভরে গেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে শুরু করে সরকারি দফতরগুলোতে টাকা ছাড়া কোনোকিছু হয় না। টাকা ছাড়া মামলা চলে না। টাকা ছাড়া হাসপাতালের বেড পাওয়া যায় না। টাকা ছাড়া থানার একটি মামলার কর্যক্রমও শুরু হয় না। এই যে অবস্থা ছাত্র সমাজ কোনদিন সমর্থন করে না।
আগামীর বাংলাদেশে যারা নেতৃত্ব দিবে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, এই নষ্ট সিস্টেমগুলো বিগত ১৬ বছরে তৈরি হয়েছে। এই নষ্ট সিস্টেমগুলো বর্তমান প্রজন্ম চায় না বলেই তাদের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে।
যে হাসিনাকে আপনারা ১৬ বছর ধরেও পতন করাতে পারেননি। সেই জায়গায় আগামীর বাংলাদেশে আপনারা যদি রাজনীতি করতে চান, ছাত্র সমাজের নেতৃত্বে আসতে চান তাহলে ছাত্র সমাজের এই কথা শুনে আগামীর বাংলাদেশকে সাজাতে হবে। আগামীর বাংলাদেশে পররাষ্ট্রনীতি হবে ছাত্র-জনতার মতামতের ভিত্তি করে।
সীমান্তে হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের স্পষ্ট বার্তা সীমান্তে আর একজন নিরপরাধ ভাই বোনকে ফেলানির মতো ঝুলে থাকতে দেখতে চাই না। আজকের পর থেকে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে তার উপযুক্ত বিচার করা হবে।
এছাড়াও চাঁদা ও নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়েও সর্তক বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা যে রাষ্ট্র সংষ্কারের নেমেছি। এই সংষ্কার আগে নিজ ঘর থেকেই শুরু করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক রাকিব, রানা, মাসুদ, মিশু আলী সুহাস ও ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন সমন্বয়ক এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ রিপন হাওলাদার
ঠিকানা: ইসরাফিল ভিলা (তৃতীয় তলা), ফলপট্টি রোড, বরিশাল ৮২০০।
মোবাইল: 01721-976302 ইমেইল: alokitosangbad8200@gmail.com
© Copyright, All Rights Reserved